Slang কি শুধুই গালাগালি-র শব্দ?

---------------------

28 April, 2021 – 05 May, 2021 9:18 AM

----------------------------------

কথ্য ভাষায় অনানুষ্ঠানিক পরিবেশে বহুল ব্যবহৃত কিছু শব্দ(words), শব্দগুচ্ছ(phrases) বা প্রকাশ(expressions)কে বলা হয় slang। আঠার শতকে মনে করা হত slang হলো দুর্বৃত্ত(criminals)দের মুখ:নিসৃত ভাষা। মানে দৃর্বৃত্তরা সাধারণত যেসব শব্দ ব্যবহার করতে স্বচ্ছন্দবোধ করতেন সেসব শব্দ হলো slang। কিন্তু পরবর্তীতে বিশেষ বিশেষ সমাজ গোষ্ঠী(social group)-র ব্যবহৃত বিশেষ বিশেষ শব্দ বা প্রকাশ কে slang বলা হয়। যেমন- স্কুল বিদ্যার্থী, শিশু, কারাবন্দী, মাদকাসক্ত, মদ্যপ, দুর্বৃত্ত, সেনাবাহিনী, তরুণ সমাজ ইত্যাদি গোষ্ঠী নিজস্ব কিছু শব্দ ব্যবহার করে যা সাধারণেরা সাধারণত করেন না। এসব শব্দকে slang বলা হয়।

অধুনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক ব্যবহারকারী একদল গোষ্ঠী সৃষ্টি হয়েছে। এরা কিছু শব্দের প্রচলন করেছে। যেমন- সেই, সেইরয়াম, ঝাক্কাস, সুন্দ্রী ইত্যাদি। ‘সেই’ মানে হলো ’খুব ভালো’। ‘সেই হইসে’ মানে ‘খুব ভালো হয়েছে’। ‘ঝাক্কাস’ অর্থও ’খুবই ভালো’। তোরে তো দোস্ত ঝাক্কাস লাগছে। সুন্দরী শব্দের বিকৃত রূপ হলো সুন্দ্রী। এগুলো স্ল্যাং। ফেইসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যেই আরেকটি গোষ্ঠী হলো ফ্রিল্যান্স ওয়েব ডিভেলপার। এরা কিছু বিশেষ শব্দ ব্যবহার করে। যেমন- ‘হাগার হাগার ডলার’, ‘কোকে পানি এসে গেল’ ইত্যাদি। এই দু’টি প্রকাশ-ই মূলত রোমান হরফে যারা বাংলা লেখে তাদেরকে ব্যাঙ্গ করে তৈরি করা হয়েছে। যেমন – Hagar hagar dollar মানে হাজার হাজার ডলার, Choke pani ase gelo মানে চোখে পানি এসে গেল। আবার ঢাকার তরুণ সমাজে ‘মামা’ ডাকার একটা চল চলছে। এক বন্ধু আরেক বন্ধুকে মামা ডাকছে। বাসের হেলপার, রিকশাওয়ালাকেও মামা ডাকা হচ্ছে। এদিকে শিশুরাও কিন্তু স্ল্যাং তৈরিতে কম যায় না। যেমন- পানিকে ‘মাম’ বলা, প্রস্রাব করাকে ‘হিসু/শিষ/শিশি/হিশি করা’ ইত্যাদি। এসব স্ল্যাং কিন্তু বেশ প্রচলিত এবং সর্বজনবিদিত। ‘মাম(MUM)’ নামে তো আমাদের দেশে একটা পানির কোম্পানিই রয়েছে। আমার ছোট বোন ছোটোবেলায় আমাকে ‘আইত্তা’ ডাকত। এখন আমরা আমাদের ভাগ্নি-ভাগিনাকেও বলি ‘তোমার আইত্তা কোথায়’। এভাবেই কিছু স্ল্যাং শব্দ দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহারের ফলে সর্বজনবিদিত ও স্বীকৃত হয় এবং মূল শব্দ ভান্ডারে স্থান করে নেয়। আবার কিছু আছে সময়ের স্রোতে হারিয়ে যায়।

আমাদের দৈনন্দিন ব্যবহার্য কিছু জিনিসপত্রের নামেরও স্ল্যাং শব্দ পাওয়া যায়। television কে বলা হতে পারে box, remote control কে flicker, zapper ইত্যাদি। আমার এক ফুফু আছেন যিনি আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসলে আমাদের ঘরে এসে বলেন – “কইগো তোদের ‘হ্যানত্যান’-ডা একটু চালাতো দেখি!” ‘হ্যানত্যান’ হলো ওনার দেয়া ‘টেলিভিশন’ এর আরেক নাম। এটাও স্ল্যাং শব্দ। টেলিফোনের স্ল্যাং শব্দ blower, horn ইত্যাদি। পরিচিত এক লোক মোবাইল ফোনকে বলতেন ‘মোবিল’। এটাকেও স্ল্যাং শব্দ বলা যায়। সস্তা রেস্তোরা, বার বা নাইট ক্লাবকে বলা হয় dive, hole ইত্যাদি। টাকা-কড়িকে আমরা বলি মাল, মাল্লু, মালপানি ইত্যাদি। টাকাওয়ালাকে বলি মালদার। টাকাকে ইংরেজিতে বলে dough, dosh, dollars(মুদ্রার নাম যা-ই হোক), (AmE)moolah ইত্যাদি।

কিছু কিছু শব্দের তীব্রতা কমানোর জন্য একটু ঘুরিয়ে আরেকটু মসৃণ কিছু শব্দ মানে স্ল্যাং শব্দ ব্যবহৃত হতে দেখা যায়। ক্যানসার রোগের নাম শুনলে কেমন একটা কর্কশ ও ভয়াবহ মনে হয়।এটাকে একটু ঘুরিয়ে বলা যেতে পারে the big C । দুর্বল হৃদযন্ত্রের লোককে বলা হয় a dicky flicker। কেউ মারা গেলে সরাসরি মারা গেছেন না বলে বলা যায় – তিনি আর নেই, চলে গেলেন অমুক, শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেছেন ইত্যাদি। ইংরেজিতে pass away, kick the bucket, pop your clogs ইত্যাদি।ব্যবসাক্ষেত্রে কিছু কোম্পানি আছে যারা তাদের কর্মীকে ছাঁটাই করলে sack, fire শব্দের পরিবর্তে ব্যবহার করে letting them go, (AmE)dehiring them ইত্যাদি।

স্ল্যাং শব্দের সবচে’ বড় মাহাত্ম্য হচ্ছে শব্দের ব্যবহার দেখে বলে দেয়া যায় কে তরুণ, কে যুবা, কে বৃদ্ধ। তরুণরা চেষ্টা করে তাদের ব্যবহৃত স্ল্যাং শব্দগুলো দিয়ে তাদের তারুণ্যকে ধরা রাখার :P । অবশ্য তাদের স্ল্যাংও অতি দ্রুত পরিবর্তনশীল। একেক সময়ে একেক স্ল্যাং এর চল চলে। যেমন – ‘লিটনের ফ্ল্যাট’ স্ল্যাংটি বেশ কিছুদিন যাবত দাপটের সংগে বাজার মাত করছে। কোনো ভীতু লোককে আমরা বলি – ফার্মের মুরগী। মজার ব্যাপার, ইংরেজিতেও কিন্তু স্ল্যাংটি রয়েছে – chicken। ‘আবুল’, ‘মফিজ’ ইত্যাদিও বেশ প্রচলিত। আজকালকার তরুণদের আমি বলি ‘ডিজ্যুস পোলাপান’। এটাও কিন্তু একটা স্ল্যাং। তো এই ডিজ্যুস পোলাপানরা যখন খুবই আহ্লাদে গদগদ হয় তখন তাদেরকে বলতে শোনা যায় – cool, yamme ইত্যাদি। সেকেলে কিছুকে তারা বলে naff। খারাপ কিছুকে বলে rank, minging ইত্যাদি। বেকুব, নির্বোধ জাতের লোককে আমি বলি ‘বলদ’।এটা আমার একটা প্রিয় স্ল্যাং। ইংরেজিতে বলা হয় –geek, prat, anorak, nerd, (AmE)dweeb ইত্যাদি। বন্ধু-বান্ধবী, ফ্রেন্ড, যাস্ট ফ্রেন্ড-দের সাথে মৌজ মাস্তি করাকে বলে – chilling।

মাদকসেবিরা প্রচুর স্ল্যাং ব্যবহার করে। হেরোইন খোরদের বলা হয় হিরোঞ্চি। নব্যযুগের ইয়াবা খোরদের বলা হয় বাবাখোর। গাঁজাসেবিদের বলা হয় গাঞ্জুটে। মারিজুয়ানাকে grass, হেরোইনকে smack, কোকেইনকে crack বলা হয়। টিনফয়েলে হেরোইন সেবনকে বলা হয় chasing the dragon। ইনজেকশনের মাধ্যমে মাদক নেয়াকে বলে jacking/banging up।

মদ্যপগোষ্ঠীর জন্যও রয়েছে স্ল্যাং। মাতাল হওয়া প্রকাশক স্ল্যাং – pissed, hammered, rat-arsed ইত্যাদি। অতিরিক্ত মদ পান করে বমি করাকে প্রকাশ করা হয় এভাবে – blowing chunks, chundering, (AmE)praying to the porcelain god ইত্যাদি।

মলমূত্র ত্যাগ প্রকাশক স্ল্যাং – piss, take a leak, have a shit, takea dump ইত্যাদি।

যৌনতা সম্পর্কিত স্ল্যাং – ‍shagging, screwing, getting your leg over ইত্যাদি।

কিছু প্রচলিত শব্দকে তাদের স্বাভাবিক অর্থকে সরিয়ে রেখে নতুন অর্থে এবং আঙগিকে (context)ব্যবহার স্ল্যাং হিসেবে করা হতে পারে। বহুল ব্যবহৃত তেমন দু’টি শব্দ হচ্ছে – f*ck এবং shit। যখন স্ল্যাং হিসেবে ব্যবহার করা হয় তখন সাধারণত এগুলোর মূল অর্থকে সরিয়ে রেখে নতুন অর্থে ও আঙ্গিকে ব্যবহার করা হয়।

উদাহরণস্বরূপ এই বাক্যটা নিয়ে চিন্তা করা যা’ক – ফুটা কইরা ফালামু।

এটা একজন দুর্বৃত্তের সংলাপ। কাউকে জানের হুমকি দিয়ে কথাটা বলা হচ্ছে। শরীরে ফুটা করা যায় সাধারণত গুলি করে। আমরা যদি ধরে নিই সে গুলি করে কাউকে মারার হুমকি দিচ্ছে তবে এর ইংরেজি হতে পারে – I’ll shoot you. কিন্তু মূল বাংলা সংলাপে হিংস্রতার যে শৈল্পিক বহি:প্রকাশ ঘটেছে তা এই ইংরেজি বাক্যে অনুপস্থিত। আমরা যদি এখানে f*ck শব্দটাকে ব্যবহার করি তাহলে কেমন হয়? I’ll f*cking shoot you। এবার কিন্তু হিংস্রতার অনেক কাছাকাছি যাওয়া সম্ভব হয়েছে, তাই না?

আবার যদি ধরে নিই বাক্যটাতে শুধু মেরে (যেভাবেই হোক) ফেলার হুমকি দেয়া হয়েছে তবে ইংরেজি হতে পারে – I’ll kill you। এটাতেও আমরা f*ck ব্যবহার করতে পারি – I’ll f*cking kill you।

লক্ষ্যণীয়, আমরা f*ck শব্দটিকে তার মূল অর্থে ব্যবহার করিনি। ক্রোধ ও হিংস্রতার মাত্রাকে বাড়ানোর ও শৈল্পিক করার কাজে শব্দটিকে ব্যবহার করেছি।

তবে এগুলো(f*ck, shit ইত্যাদি) আবার swear শব্দগোষ্ঠীরও অন্তর্ভূক্ত। swear words দ্বারা ক্রোধ(anger), বিরক্তি(annoyance), গালাগালি, অভিসম্পাত(cursing) ইত্যাদি প্রকাশ করা হয়। slang কিংবা swear যেভাবেই ব্যবহার করা হোক না কেন এগুলোর ব্যবহারকে নিরুৎসাহিত করা হয়।ভদ্র সমাজে ভদ্রলোকের মুখে এগুলো ঠিক মানায় না। অবশ্য আজকাল ইংরেজি সিনেমায় ভদ্রলোকের মুখে হরহামেশাই এগুলো শোনা যায়। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, হয় ছোটলোকগুলো ভদ্রলোক সেজেছে না হয় ভদ্রলোকগুলো ছোটলোক হয়ে গেছে ;) ।  সে যা-ই হোক, গালাগালি করা, অভিসম্পাত করা ইত্যাদি বলতে ও শুনতে ভদ্রলোকেরা নিশ্চয়ই পছন্দ করবেন না। সুতরাং এগুলোকে এড়িয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। তবে বিরক্তি, ক্রোধ প্রকাশের জন্য বিকল্প হিসেবে সচেতনভাবে আরো কম রূঢ় শব্দগুলোকে ব্যবহার করা যেতেই পারে।

Slang/swear শব্দ ব্যবহার না করলেও জেনে রাখাটা কিন্তু জরুরী। কোনো ইংরেজে দুর্বৃত্ত আপনাকে বললো – you motherf*cker। আর আপনি এটাকে প্রশংসা ভেবে দাঁত কেলিয়ে তেলতেলে হাসিতে হাস্যোজ্জ্বল হলেন। কেমন হয়ে যায় না! ;)

---

(Oxford Advanced Learner’s Dictionary অবলম্বনে রচিত)

 

Comments

Popular Posts